ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আরও তথ্য দিল বাংলাদেশ সরকারকে



বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে আরও ব্যবহারকারীর তথ্য দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত মোট ১০টি অনুরোধের মাধ্যমে নয়জন ব্যবহারকারীর তথ্য চেয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যে ২০ শতাংশ তথ্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরকারকে দিয়েছে বলে তাদের সর্বশেষ ‘গভর্নমেন্ট রিকোয়েস্ট রিপোর্ট’-এ বলা হয়।

ফেসবুক প্রতি ছয় মাস অন্তর এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে কোনো দেশের সরকার ফেসবুকের কাছে কী ধরনের অনুরোধ জানায়, তা তুলে ধরা হয়। তবে কোন অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়, তা উল্লেখ করা হয় না।

সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। আর বিশ্বে এই সংখ্যা ১৭৯ কোটির বেশি, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ।
ফেসবুকের ষাণ্মাষিক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ম অবমাননা ও তথ্য-প্রযুক্তি আইন ভঙ্গের যুক্তি দেখিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) অনুরোধ পাওয়ার পর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ দুটি ‘কনটেন্ট’ দেখার সুযোগ বন্ধ করেছে।
এবারের প্রতিবেদনে ২০১৬ সালের প্রথম ছয় মাসে বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছ থেকে পাওয়া অনুরোধের তথ্য প্রকাশ করেছে ফেসবুক। ফেসবুকের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে দেখা গেছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন-এই ছয় মাসে মোট ১০টি অনুরোধ করা হয়েছে ফেসবুককে। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে একটি অনুরোধে একটি অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হলে তার সম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছে ফেসবুক।
ফেসবুকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছ থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করে রাখার অনুরোধ বাড়ছে। তবে এ বছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে এ ধরনের কোনো অনুরোধ যায়নি।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ২০১৩ সাল থেকে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের এ ধরনের অনুরোধ ২০১৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে প্রথমবার ফেসবুকের সাড়া পায়। 
ওই বছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২টি অনুরোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ৩১ জন ব্যবহারকারীর তথ্য চাওয়া হয়। এর মধ্যে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ তথ্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরকারকে দেয়। এ ছাড়া বিটিআরসির অনুরোধে সাড়া দিয়ে চারটি কনটেন্ট সরিয়ে ফেলা হয়।
তার আগে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত আড়াই বছরে মোট ৩৭ জন ব্যবহারকারীর তথ্য চেয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া পায়নি বাংলাদেশ সরকার।
অন্যদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে, ২০১৬ সালের প্রথম ছয় মাসে বিভিন্ন সরকারের পক্ষ থেকে ফেসবুকের কাছে অ্যাকাউন্ট-সংক্রান্ত তথ্য চাওয়ার হার ২৭ শতাংশ বেড়েছে। ওই সময় মোট ৫৬ হাজার ২২৯টি অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে, যা গত বছরের শেষ ছয় মাসে ছিল ৪৬ হাজার ৭১০। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, এবারে যেসব তথ্য চাওয়া হয় তার অর্ধেকের বেশি প্রকাশের অনুমতিহীন নির্দেশ বলে ফেসবুক তা ব্যবহারকারীকে জানাতে পারেনি। তবে স্থানীয় আইন লঙ্ঘনকারী পোস্ট সরানোর অনুরোধ ৮৩ শতাংশ কমেছে।
গত বছরের নভেম্বরে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকের নানা ‘অপব্যবহার ও নেতিবাচক’ বিষয় তুলে ধরেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। এরপর চলতি বছর জানুয়ারিতে সিঙ্গাপুরে ফেসবুকের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান কার্যালয়ে বৈঠকও করেন তিনি।
দেশে ফিরে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, সাইবার নিরাপত্তা, নারীর প্রতি অবমাননাসহ বাংলাদেশের প্রচলিত ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ সাপেক্ষে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরকারের অভিযোগ-অনুরোধ বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
গত জুনে জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে তারানা হালিম জানান, ইন্টারনেটে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়’ নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিকার পাওয়ার জন্য ফেসবুকের পাশাপাশি গুগল ও মাইক্রোসফটের সঙ্গেও সরকারের ‘সমঝোতা’ হয়েছে। 
Thank you for reading this article on ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আরও তথ্য দিল বাংলাদেশ সরকারকে on the Apps For Life bd blog if you want to spread this article please include links as Source, and if this article useful please bookmark this page in your web browser, with How to press Ctrl + D on your keyboard button.

Latest articles: