তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে নাটোরে দেশের প্রথম শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টারে চলছে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম । ২০১৮ সালের মধ্যে পাঁচটি বিষয়ভিত্তিক ১৯টি প্রশিক্ষণ ব্যাচে মোট ৪৮০জনকে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার, নাটোর স্থাপন’ শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় এক কোটি ৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর, অভ্যন্তরীন রাস্তা, বিদ্যুৎ ও স্যানেটারী কাজ সহযোগে পুরাতন জেলখানার তিনটি ভবন মেরামত ও আধুনিকায়ন কাজ সম্প্রতি সমাপ্ত হয়। এরমধ্যে দুইটি ভবন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং অপরটি ক্যান্টিন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার এবং শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার কর্মসূচীর উপ পরিচালক এস এম আল মামুন জানান, দেশে সাতটি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার নির্মাণ কর্মসূচী বাস্তবায়ন পরিকল্পনার আওতায় প্রথম শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার নাটোরে নির্মাণ করা হচ্ছে।
পুরাতন জেলখানার মেরামত ও সংস্কার ছাড়াও একই আঙিনায় ৫ কোটি ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ছয় তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের নতুন দ্বিতল ভবনের নির্মাণ কাজও চলছে যুগপৎভাবে। নির্মিতব্য এই ভবনের নির্মাণ কাজ চলতি অর্থ বছরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নির্মাণ কাজ তদারককারী ইমাম মেহেদী।
প্রাথমিকভাবে জেলখানার মেরামত ও আধুনিকায়নকৃত প্রশিক্ষণ ভবনে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা গ্রাফিক্স ডিজাইন, কম্পিউটার হার্ডঅয়ার এন্ড নেটওয়ার্কিং ট্রাবলশ্যুটার, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এবং ই-কমার্স ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রতিদিন তিন ঘন্টা করে মোট ১২০ ঘন্টার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রতি ব্যাচে ২৫ জন করে শিক্ষার্থী দুইটি ব্যাচে প্রশিক্ষণ গ্রহন করছেন। তবে ব্যতিক্রম ই-কমার্স ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে ৩০জন প্রশিক্ষণার্থীর মোট ৭৮ ঘন্টার প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এ কেন্দ্রে শতকরা ৯০ শতাংশ সরকারী ভর্তুকিতে মোট ৪৮০ জন শিক্ষার্থীর প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ থাকছে।
সদ্য প্রশিক্ষণ শেষ হওয়া ই-কমার্স ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট এর প্রশিক্ষক কাওসার আহমেদ জানান, প্রশিক্ষণ সমাপনকারী ৩০ প্রশিক্ষণার্থীর প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন নামে তাদের ই-কমার্স সাইট খুলেছেন। এদের মধ্যে পাঁচজন অনলাইন ট্রেডে পণ্য বিপনন করেছেন। সাতজন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিপনন ব্যবন্থাপনার কাজ করছেন। মার্কেটিং এ অনার্সের শিক্ষার্থী খুরশীদা রহমান সাজ সপ ডট কম নামে নিজের হাতে তৈরি কুটির শিল্পের পণ্য বিপনন করছেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রশিক্ষণার্থী মাহমুদ হাসান অনলাইন মার্কেটে গ্রাফিক্স ডিজাইন করে ইতোমধ্যে ১৮০ ডলার উপার্জন করেছেন। উপার্জনের পরিধি ক্রমশ: বাড়বে বলে জানান প্রশিক্ষক মোঃ শামিম আলী। ইন্টারনেট সংযোগে গতি বৃদ্ধি করা হলে প্রশিক্ষণার্থীদের কাজের গতিশীলতা আরো বাড়বে বলে মত প্রকাশ করেছেন ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর প্রশিক্ষক মোঃ মশিউর রহমান।
নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হলে আগামী জুলাই মাস থেকে ফ্রিল্যান্সাররা এ সেন্টারে ইনকিউবেশন সুবিধা পাবেন। এককভাবে ১৫ জন পুরুষ এবং ১৪ জন মহিলা প্লাগ এন্ড প্লে পদ্ধতিতে ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্যে ইনকিউবেশন সুবিধা পাবেন। এছাড়া প্রতি সেলে পাঁচজন করে মোট ১০ টি প্রাতিষ্ঠানিক ইনকিউবেশন সেলে দলগত ফ্রিল্যান্সিং এর সুযোগ থাকবে।বাসস
অরিজিনাল পোস্ট
পোস্টটি Techzoom থেকে নেওয়া